নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিফাত হোসেনকে (১৪) আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় ৪ শিক্ষকসহ ৫ জনকে শ্রীঘরে পাঠিয়েছে নওগাঁ জেলা ও দায়েরা জজ আদালত।
সোমবার দুপুরে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে আদালতে প্রেরণ করেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইমতিয়াজুল ইসলাম।
কারাগারে পাঠানো ৪ শিক্ষকসহ ৫ জন হলেন, কীর্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আজাহারুল ইসলাম (৫৬), সহকারী শিক্ষক মোঃ সাজেদুর রহমান সাজু (৪৩), শ্রী সুবল মণ্ডল (৩৯), মোঃ নজরুল ইসলাম (৫১) ও দাসকান্দি গ্রামের মৃত হক সাহেবের ছেলে মিঠু। মামলার এজাহার নামীয় অন্য আসামীরা হলো ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ স্বরন সাহারিয়ার (১৬), শ্রী রিত্তিক (১৬), মোঃ রিয়াদ হোসেন (১৬)।
উল্লেখ্য যে, গত বছরের ৩১ মে সকালে স্কুলের অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে কীর্ত্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিফাত হোসেনকে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্মরণ শাহরিয়ার, হৃতিক ও রিয়াদ হোসেন মারধর করেন। ঘটনাটি সিফাত তার পরিবারকে জানালে ওই দিনই সিফাতের বাবা মিজানুর রহমান প্রধান শিক্ষক আজহার আলীর কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বিষয়টিতে কর্ণপাত না করে উল্টো সিফাতকেও মারপিট করতে বলেন, নতুবা হাতে মেয়েদের চুরি পড়ে থাকতে বলেন।
এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করায় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী স্মরণ শাহরিয়ারের বাবা সাজেদুর রহমান শিক্ষার্থী সিফাতকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বিদ্যালয় হতে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।
এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুবল মন্ডল ও নজরুল ইসলামও সিফাতকে নিয়ে হাসাহাসি করেন। ন্যায়বিচার না পাওয়ায় অত্যন্ত মনোকষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরে ওই দিন রাতে গ্যাস বড়ি (কীটনাশক) খায় সিফাত। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পর দিন (১ জুন) দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে নওগাঁ আমলী আদালতে ওই বছরের ৯ জুন মামলা দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন