নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকার রহিমা রি-রোলিং মিলের লোহা গলানোর পাত্র (ভাট্টি) বিস্ফোরণের ঘটনায় গতকাল ৫মে শুক্রবার ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আরো ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলো কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার মৃধা বাড়ি এলাকার মোঃ ফজর আলী মিয়ার ছেলে ইলিয়াস (৩৫), রাজবাড়ি জেলার রমাকান্তপুর এলাকার আহম্মদ আলীর ছেলে নিয়ন (২০) ও আলমগীর (৩০)। তারা শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে ৪মে শংকর দাস নামের আরো এক শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হয়। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা দাড়ালো চার-এ।
এদিকে ৫মে বিকেলে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যরা হলেন ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান, কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রফিক আহমেদ ও পল্লী বিদ্যুতের ইঞ্জিনিয়ার আলতাফ হোসেন।
মিলের শ্রমিকরা জানায়, গত ৬মাস ধরে কারখানায় লোহা উৎপাদন শুরু হয়। এখানে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। শ্রমিকদের নিরাপত্তার সরঞ্জাম নেই। শ্রমিকদের নিরাপত্তার পোশাক দেয়া হয়না। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই তারা সেখানে কাজ করেন।
শেখ হাসিনা বার্ণ ও প্লাষ্টিক সার্জারি ইনষ্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এসএস আইয়ুব হোসেন বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসা দগ্ধ ৭ জনের মধ্যে ৪ জন মারা গেছে। বাকি ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের মধ্যে রাব্বির শরীরের ৯৮ শতাংশ, জুয়েলের শরীরের ৯৫ শতাংশ ও ইব্রাহিমের শরীরের ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
রহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডের তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গত ৬মাস ধরে কারখানায় লোহা উৎপাদনের কাজ চলছে। কারখানায় সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। শ্রমিকরা নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করে কাজ করে। লোহা গলানোর সময় গলিত লোহা ছিটকে শ্রমিকরা দগ্ধ হয়।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল হক বলেন, তদন্ত কমিটির কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানায় সংযোগ দেওয়া বিদ্যুত ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য গত ৪মে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় রূপগঞ্জের রহিমা রি-রোলিং মিলের লোহা গলানোর পাত্র (ভাট্টি) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
মন্তব্য করুন