বাংলা নতুন বছরের এই প্রথম দিনে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে “সহমর্মিতার ঈদ” কর্মসূচির অংশ হিসেবে জামালপুর প্রথম আলো বন্ধুসভার বন্ধুরা ৫০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তাদের পরিবারের মাঝে নতুন জামা ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে।
“সহমর্মিতার ঈদ” কার্যক্রমটি বন্ধুসভার নিজস্ব একটি উদ্যোগ। আত্মশুদ্ধির মাসে সহমর্মিতায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় প্রথম আলো জামালপুর বন্ধুসভা। গতকাল ১৪ এপ্রিল সকাল ১০:৩০ মিনিটে জামালপুর সদরের রশিদপুর এলাকার ইজ্জাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ও পরে বেলা ১২ টায় পলাশগড় এলাকায় শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম আলো জামালপুর বন্ধুসভার “সহমর্মিতার ঈদ” কর্মসূচিটি।
এবারের আয়োজনের জন্য প্রথম আলো বন্ধুসভা, জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ এর পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম রোজার থেকেই জামালপুর বন্ধুসভার বন্ধুরা নিজের ও উপদেষ্টাদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ শুরু করে। একইসাথে চলছিল সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তাদের পরিবার খোঁজে তালিকাবদ্ধ করার কাজ। গতকাল রাতে সব ঠিক হওয়ার পর বন্ধুরা মিলে উক্ত তালিকাভুক্ত শিশুদের জন্য নতুন জামা ও তাদের পরিবার এর জন্য খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করে।

শিশুরা পেয়েছে একটি করে নতুন রঙিন জামা এবং প্রতিটি পরিবার পেয়েছে ঈদের খাদ্যসামগ্রী। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল, ৩ কেজি চাল, ১/২ কেজি ডাল, ১ কেজি আলু, ১/২ কেজি পেঁয়াজ, ১/২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ প্যাকেট দুধ, ১/২ কেজি চিনি, ১ প্যাকেট সেমাই, ১ প্যাকেট নুডুলস ইত্যাদি।
আয়োজনের শুরুতেই উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বন্ধুসভার এই “সহমর্মিতার ঈদ” উদ্যোগ টি নিয়ে কথা বলেন জামালপুর বন্ধুসভার সভাপতি সিফাত আব্দুল্লাহ। তিনি তার বক্তব্যে উক্ত আয়োজনে কিভাবে জামালপুর বন্ধুসভার বন্ধুরা এই সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তাদের পরিবারকে সাহায্য করার জন্য কাজ করেছে তার তুলে ধরেন।
উক্ত আয়োজন উপস্থিত ছিলেন ইজ্জাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিসুজ্জামান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “প্রথম আলো বন্ধুসভা, জামালপুরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি, পহেলা বৈশাখে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ঈদ উপলক্ষে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কারার জন্য। পাশাপাশি উক্ত আয়োজনটি বাংলা নববর্ষের ১ম দিন ১লা বৈশাখে পালন করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষ থেকে প্রথম আলো জামালপুর বন্ধুসভার সকল সদস্য কে স্বাগতম।”
এসময় উক্ত বিদ্যালয়ের সহ প্রধান শিক্ষক মো: জাকির হোসেন ও সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিন উপস্থিত ছিলেন। তারাও জামালপুর বন্ধুসভার এই আয়োজনকে অনেক সাধুবাদ জানায়।

রশিদপুর এলাকার ৭০ উর্ধ হজিরন তার নাতি সাজিদ (৭) কে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা এই উপহার পাইয়া খুব খুশি হইছি।”
উক্ত আয়োজনে এই এলাকার মোট ১৬ জন বিধবা মহিলা ছিলেন যারা এ পর্যন্ত কোন সাহায্যই পায়নি ঈদ উপলক্ষে। এবার জামালপুর বন্ধুসভার এই ঈদ উপহার পেয়ে তারা খুব খুশি হয়েছেন।
এরপর বেলা ১২ টায় পলাশগড় এলাকায় শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অসহায় কিছু পরিবারের মাঝে ঈদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।
এ সময় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্য জামালপুর বন্ধুসভার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাভী সেকান্দার আলম বলেন, “আমরা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আমরা আমারা আমাদের হাতখরচের টাকা থেকে কিছু কিছু করে জমিয়ে আপনাদের জন্য এই সামান্য কিছু উপহার নিয়ে এসেছি। দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে আপনাদের নিয়ে কিছু করতে পারি।”
পলাশগড় রাশিদা বেগম (৪৫) বলেন, “মনে করেন আমগর জি উপহারটা দিয়েছে তার জইন্যে আমরা অনেক অনেক ধন্যবাদ। মনে করেন তার জইন্যে আননেরাও খুশি আমরাও খুশি। আল্লাহ যেন আননেগর ভালো করে, আমগোরও ভালো করে। দোয়া কইরেন। আমরাও দোয়া করি।”
প্রথম আলো বন্ধুসভা, জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ এর ঘোষণা অনুযায়ী এই “সহমর্মিতার ঈদ” কার্যক্রমটি চলবে ২৭ রমজান পর্যন্ত। তাই জামালপুর বন্ধুসভার বন্ধুরা ঠিক করেছে এর মধ্যে তারা নিজের বাসার আশেপাশে থাকা সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তাদের পরিবারকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাহায্য প্রদান করবে।
আজকের এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন, প্রথম আলো জামালপুর বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি মোহাইমিনুল ইসলাম আকাশ, বর্তমান সভাপতি সিফাত আব্দুল্লাহ্, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাভী সেকান্দার আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন রাহুল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জাকারিয়া জাকি, অর্থ সম্পাদক অন্তরা চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক সানি সিরাজ মিথিলা, প্রচার সম্পাদক হিজবুল্লাহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আশা সরকার, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ফারিয়াজ ফাহিম নেহাল, বইমেলা সম্পাদক রুবেল হোসেন হিমু, বন্ধু শাকিল, স্বর্ণা, বিপু সহ আরও অনেকে।
মন্তব্য করুন