বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই সন্তানের জননী গৃহবধূ শাহিদা বেগমের (২৮) মরদেহ রেখে স্বামী হারুন অর রশিদ চৌকিদার পালিয়েছে। শাহিদার বাবা আব্দুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার নাটক করা হয়েছে।
গত সোমবার (০৩ এপ্রিল) আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) বিকেলে বাবার কাছে শাহিদার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই দম্পতির দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
জানা গেছে, ১৫ বছর পুর্বে আমতলী উপজেলার শাহজাহান চৌকিদারের ছেলে হারুন অর রশিদ চৌকিদারের সঙ্গে কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার বাটিয়াভিটা গ্রামের আব্দুল কাদের চৌকিদারের কন্যা শাহিদার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শাহিদাকে হারুন অর রশিদ বিভিন্ন অযুহাতে নির্যাতন করে আসছে।
গত জানুয়ারী মাসে হারুন অর রশিদ প্রথম স্ত্রী শাহিদাকে না জানিয়ে আমতলী উপজেলার নীলগঞ্জ গ্রামের শানু মিয়ার কন্যা নার্গিসকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
এ নিয়ে প্রথম স্ত্রী শাহিদার সাথে বেশ বিরোধ চলে আসছে। স্বামী হারুন অর রশিদ প্রথম স্ত্রী শাহিদাকে দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিসকে মেনে নিতে চাপ দেয়। কিন্তু শাহিদা এতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে স্বামী হারুন অর রশিদ বেশ কয়েকবার প্রথম স্ত্রী শাহিদাকে মারধর করেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
গত ২০ মার্চ হারুন অর রশিদ তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে তার বাড়ীতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে তাদের বিরোধ আরো তীব্র আকার ধারন করে। সোমবার রাতে ঘরের আড়ার সাথে শাহিদার গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় দেখতে পায় স্বামী হারুন। পরে তিনি প্রথম স্ত্রী শাহিদাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওইখানে তার মরদেহ রেখে তিনি পালিয়ে যান।
স্বজন ছাড়া মরদেহ হাসপাতালের ফ্লোরে পড়ে থাকে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে মরদেহ বাবা আব্দুল কাদের চৌকিদারের কাছে হস্তান্তর করেছে। শাহিদার বাবার অভিযোগ জামাতা হারুন অর রশিদ দ্বিতীয় স্ত্রীকে ঘরে তোলার পর থেকে তার মেয়েকে বেশ কয়েক দফায় মারধর করেছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একে এম মিজানুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন