একজন সাধারণ রিকশাচালকের একটি গান স্থান করে নেয় লাখো মানুষের হৃদয়ে। ইত্যাদির মঞ্চে ঘটে তার আত্মপ্রকাশ। নন্দিত সংগীতশিল্পী কিশোর কুমারের গাওয়া ‘এক দিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটির মাধ্যমে রাতারাতি পরিচিতি পান আকবর।
এরপর তার মৌলিক গান ‘তোমার হাত পাখার বাতাসের অডিও-ভিডিও দুটোই হয় সুপারহিট। তার সেই মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে আকবরের সঙ্গী হয়েছিলেন চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। এভাবেই গোছালো জীবন পার করছিলেন তিনি। দেশ-বিদেশের মঞ্চে গান গেয়ে ভালোই চলছিল তার সংসার।
কিন্তু হঠাৎই সুখি জীবনের হয় ছন্দপতন। কিডনির অসুখে আক্রান্ত আকবর পাশাপাশি দেখা দেয় ডায়াবেটিসও। বেশ কয়েক বছর ধরেই ছন্নছাড়া জীবন অতিবাহিত করেন। মাঝে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও বর্তমান যেন দূরভাগ্যের কাছে আবারো পরাজিত। দ্রুত চিকিৎসা না পেলে অচিরেই পঙ্গুত্বকে আপন করে মেনে নিতে হবে আকবরকে।
সম্প্রতি নেট মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে কারও সহযোগিতা ছাড়া অচলপ্রায় আকবরের কয়েকটি ছবি। তাতে দেখা যায় ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটছেন তিনি। জানা গেছে, পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। যে কারনে শরীরে দেখা দিয়েছে দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি।
লাখো হৃদয় জয় করা সেই গায়ক আকবরকে দেখলে এখন চমকে উঠবেন যে কেউ। বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয় তাকে। আর তাতেই তার পরিচিতরা হয়েছেন বিস্মিত, ভারাক্রান্ত।

আকবর গণমাধ্যমকে বলেন, বিপদ আমাকে ছাড়ছেই না। আমি চলতে পারি না। আমার মেরুদণ্ডের হাড়ের মধ্যে নার্ভ ঢুকে গেছে। এমআরআই করেছিলাম। তখন জানিয়েছিল, অপারেশনে ৭০ হাজার টাকার মতো লাগতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে আকবরের পাশে দাঁড়ান ঢাকাই সিনেমার মুভি লর্ড খ্যাত ডিপজল। তিনি আকবরকে ৫০ হাজার টাকার সহায়তা দিয়েছেন। গায়কের ভাষ্য, ডাক্তার জানিয়েছিলেন, অপারেশনের জন্য ৭০ হাজার টাকা লাগবে। অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ১ লাখ। সঙ্গে সঙ্গে আমি ডিপজল ভাইকে ফোন দিই। তিনি ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
কিন্তু পরক্ষণেই আকবর জানতে পারেন, তার মেরুদণ্ডের শেষ হাড়ে সমস্যা। পরিবর্তন করতে হবে ডিস্কও। যার জন্য প্রয়োজন ৪-৫ লাখ টাকা। যদিও এর আগে আকবরের অসহায় অবস্থার কথা জানার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা ছিল ৩ বছর মেয়াদী। অর্থাৎ ৩ বছর পূর্ণ হলে টাকাগুলো উত্তোলন করা যাবে। এদিকে মেয়াদ পূর্ণ হলেও সেই অর্থ তুলতে পারছেন না আকবর।
তিনি বলেন, আমাকে বলা হয়েছিল, ৩ বছর পর এটা আমি ভাঙাতে পারব। তিন বছর পূর্ণ হলেও ব্যাংক সে টাকা আমাকে দিচ্ছে না। সেটা তুলতে পারলে এখন হয়তো বাঁচতে পারতাম। হয়তো ভবিষ্যতেও বেঁচে থাকবো, তবে পঙ্গু হয়ে।
মন্তব্য করুন